বাংলার মুসলিম ইতিহাসের চমকপ্রদ সংস্কৃতি এবং শৈল্পিক মানসের চিহ্ন বয়ে নিয়ে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে দারসবাড়ি মসজিদ ও মাদ্রাসা। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাচীনকালে বিশেষত সুলতানি শাসনামলে স্থাপত্য বিদ্যার যে অপূর্ব উন্মেষ ঘটেছিল, এ মসজিদ এবং মাদ্রাসার ধ্বংসস্তুপের ভিত্তিভূমিই এর পরিচয় বহন করে। সে যুগেও স্থাপত্য শিল্পের প্রকৌশলগত দিক, সুনিপূণতার ছাপ বিদ্যমান এ স্থাপনাদ্বয়ে। আবার মানসে এবং রুচিশীলতায় কতটা উন্নত ছিল বাংলার মুসলিম শাসনামল, তাও প্রকাশ করে দারসবাড়ি। দারসবাড়ি মাদ্রাসার সবচেয়ে অনন্য বিষয় হল এর পাঠ্যক্রম। পাঠ্যক্রম বিবেচনায় আনলে, হাল আমলে এসেও তা আমাদেরকে অভিভূত করে। সুবিশাল এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অঞ্চল হতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার জন্য এখানে সমবেত হতেন এবং বাংলার বুকে সর্বপ্রথম এই বিশ্ববিদ্যালয় হতে বোখারি ও মুসলিমসহ সিহাহ সিত্তাহ হাদিস শিক্ষা দেওয়া হতো। আবুল ফজল ও অন্যান্যদের বিবরণ থেকে জানা যায়, বাংলার মাদরাসাসমূহে (শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে) কোরআন, হাদিস, ধর্মতত্ত্ব, আরবি, ফারসি, আইনশাস্ত্র, যুক্তিবিদ্যা, গণিত, রসায়ন, চিকিৎসাবিদ্যা, জ্যামিতি, জ্যোতির্বিদ্যা ইত্যাদি পড়ানো হতো।
.
‘দারসবাড়ি মসজিদ’
আর্ট: উম্মে হানি
শিউলিমালা একাডেমি